অ
মুক্তিযুদ্ধ
আমি যদি…
সব কিছু শুরু হওয়ার আগেই
শেষ হয়ে যেতাম
যদি সূর্যপ্রনামের আগেই
রক্তিম দিগন্তে মিলিয়ে যেতাম…
তাহলে আজ
যৌবনের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আগুয়ান হাতের
ভিক্ষে কুড়তামনা…
আমার মেরুদণ্ড ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে
ওরা অস্ত্রাগার সাজাতে পারতোনা
জীবনের মানচিত্রটা অন্যভাবে তৈরি হত।
আমিও হয়তো আমার মুক্তিযুদ্ধে শরীক হতাম।
পরিত্রাণ
স্বপ্ন থেকে মুক্তি চেয়ে
স্বপ্নালকে আশ্রয় নিই
পায়ের কাছে বিশাল একাকীত্ব
প্রতিধ্বনি তুলে উপস্থিতি জানায়
যেন জ্যোৎস্নায় সমুদ্রের বুকে
ভৌতিক জাহাজের পতাকার হাথছানি।
আমি লাল-সবুজ আলো উপেক্ষা করে
দ্রুত ধাবমান…
শেষ ট্রেনের হুইসিল এখনও স্পষ্ট…
যদি হারিয়ে যাই মানুশ নামের অসংখ্য
নামহীন মানুশের মধ্যে…
তার আগে ক্ষমা চাওয়া বাকি থাকবে
একজনের কাছে।
অভিজাত্রি
নিঃশব্দ, নিশ্ছিদ্র অন্ধকারকে এক পাশে রাখি
চোখ জ্বালা করে, তবু জেগে থাকি
এক একটা দিন অবুঝ অহমিকায়ে কেটে যায়
রক্তিম বিকেলের আকাশ ধেকে যায়ে কালো মেঘে
তবু আমি…
ম্লান নক্ষত্রের অভিমান, শেষ রক্তবিন্দু যদি ঝরে
আমি অপেক্ষামান তার তরে
হাওয়ায়ে হাওয়ায়ে খবর আসে তার প্রত্যাগমনের
আমি অভিযাত্রী, আমি চলে যাবো
আমার চঞ্চলতা দিয়ে যেতে চাই
ভবিশ্যতকে…।
আমার স্বপ্নের পৃথিবী
প্রথম সূর্যের রক্তিম নিঃশ্বাসের সঙ্গে-সঙ্গে
একজন মানুশ বোললো শান্তি-শান্তি
আর তখনি এক ঝাঁক জঙ্গি-বিমান
উড়ে গেল অসংখ্য মানুশের প্রান নিতে
সাজান-সুন্দর কিছু শহরকে ধুলিস্বাত করতে
এই অন্ধ-মুক বিমান চালকেরাও তো মানুশ
তারা কি দেখেনি ফুলের মহিমা,
পাখীর গান শুনে জাগেনি মনে চঞ্চলতা?
মাতৃহারা শিশুর ক্রন্দন, সন্তানহারা জননির হাহুতাস
ওদের মনে ফেলেনি কি কোনও প্রতিভাস?
আমি পৃথিবীর মানুশ, প্রতিবাদের লাল পতাকা
তুলে বললাম, শান্তি চাই, শান্তি দাও।
আরও কয়েক লক্ষ সমব্যাথির লাল পতাকায়
নীল আকাশ ছেয়ে গেল – নিরস্ত্র হাত
সশস্ত্র সন্ত্রাসের সামনে এক হয়েছে আজ
ভেদাভেদ নেই জাতীর অথবা ধর্মের – জয় নিশ্চিত…
এই মধুময় পৃথিবী আমি
আগামি দিনের নবজাতকের উদ্দেশে রেখে যেতে চাই…